সীমান্তে লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)’র বিশেষ অভিযানে ভারতীয় কম্বল এবং ফেন্সিডিল ও গাঁজা জব্দ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি)’র এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এমনটিই জানিয়েছেন।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর দায়িত্বপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় চলমান চোরাচালান ও মাদক বিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন বিওপির বিশেষ টহলদল ৩টি পৃথক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ভারতীয় কম্বল এবং ফেন্সিডিল ও গাঁজা জব্দ করেছে। চোরাচালান প্রতিরোধের মাধ্যমে সীমান্ত নিরাপত্তা ও মাদক বিরোধী অভিযানে বিজিবি’র দৃঢ় অবস্থানের প্রমাণ মিলেছে।
বিশ্বস্ত গোয়েন্দা সূত্রে বিজিবি জানতে পারে যে, চোরাকারবারীরা সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার করবে। উক্ত তথ্যানুযায়ী, মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত আনুমানিক ১২টা ১০মিনিটে অনন্তপুর বিওপি’র আওতাধীন কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার পশ্চিম অনন্তপুর নামক স্থানে বিজিবির টহলদল অভিযান পরিচালনা করে। অভিযান পরিচালনাকালীন কতিপয় সন্দেহজনক ব্যক্তির গতিবিধি লক্ষ্য করে বিজিবি টহল দলের সদস্যরা ধাওয়া করলে চোরাকারবারীরা তাদের সাথে থাকা মালামাল ফেলে দৌড়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে চলে যায়। পরবর্তীতে ফেলে রাখা মালামাল তল্লাশী করে ভারতীয় কম্বল ১৭টি উদ্ধার করা হয়।
অপরদিকে, একই দিন রাত আনুমানিক ১২টা ৩০মিনিটে গোড়কমন্ডল বিওপি’র আওতাধীন কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী থানার নামাটারি নামক স্থানে টহল পরিচালনাকালীন চোরাকারবারীদের গতিবিধি টের পেয়ে টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করলে চোরাকারবারীরা তাদের সাথে থাকা মালামাল ফেলে দৌড়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের অভ্যন্তরে চলে যায়। পরবর্তীতে ফেলে রাখা মালামাল তল্লাশী করে ৪.৭কেজি ভারতীয় গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও, মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) রাত আনুমানিক ২টা ৩০মিনিটে বুড়িরহাট বিওপির টহলদল সীমান্তের কাছাকাছি কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের চলাচল লক্ষ্য করে তাদের চ্যালেঞ্জ করলে তারা বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে তাদের সাথে থাকা মালামাল ফেলে দ্রুত ভারতের দিকে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে তল্লাশি করে ভারতীয় ৫০টি বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয়।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর অধিনায়কের পক্ষ থেকে জানানো হয়, উদ্ধারকৃত পণ্য ভারতীয় কম্বল ১৭টি, যার বাজার মূল্য ১লক্ষ ১০হাজার ৫শত টাকা ও ভারতীয় গাঁজা ৪.৭কেজি, যার বাজার মূল্য ১৬হাজার ৪শত ৫০টাকা এবং ভারতীয় ফেন্সিডিল ৫০টি বোতল, যার বাজার মূল্য ২০হাজার টাকাসহ সর্বমোট বাজার মূল্য ১লক্ষ ৪৬হাজার ৯শত ৫০টাকা। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চোরাকারবারীদের তথ্য সংগ্রহপূর্বক তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম পিএসসি বলেন, দেশের যুব সমাজকে মাদক মুক্ত রাখতে বিজিবি সর্বদা সতর্ক ও প্রস্তুত রয়েছে। মাদক পাচার রোধে সীমান্তের স্পর্শকাতর এলাকা চিহ্নিত করে বিজিবি’র গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল তৎপরতা আরও জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া তিনি স্থানীয় জনগণকে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা এবং প্রতিরোধে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান এবং গোপন তথ্য প্রদানকারীদের পরিচয় গোপন রাখার নিশ্চয়তা দেন।
এই অভিযানে বিজিবির সাহসিকতা ও কৌশলগত দক্ষতা প্রশংসার দাবিদার, যা মাদক মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।